জামালগঞ্জে ধনাঢ্য পরিবার বন্দোবস্ত পেল দেড়শ শতক খাসজমি
- আপলোড সময় : ০৭-১১-২০২৪ ০৯:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-১১-২০২৪ ০৯:০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জে ভূমিহীন সেজে এক ধনাঢ্য পরিবার দেড়শ শতক মূল্যবান খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ওই পরিবারের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকার পরও নিজের বসত বাড়ি ও বাড়ির পাশে দুই দাগে বড় আকারের দুটি প্লট বন্দোবস্ত নিয়েছে। শুধু তাই নয় সম্প্রতি জোর করে প্রতিবেশীর বসতবাড়িটিও দখলের চেষ্টাসহ মিথ্যা মামলা ও নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ওই প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে গত রোববার সকালে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কালীবাড়ি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো. মারুফ আহমেদ।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, উপজেলার কালীবাড়ি গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল করিম পৈতৃক সূত্রে একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। পিতার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারী সূত্রে তার পিতার নামে থাকা প্রায় সাত একর ভূমির মালিক হন আব্দুল করিম। এছাড়াও তার নিজ নামে উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাচনাবাজারে অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের একটি নিজস্ব দোকান ঘর, মসলা মিলসহ আরো বিভিন্ন জায়গা-জমি রয়েছে। পৈতৃক সূত্রে ও নিজ নামে কেনা এতো সম্পদ থাকার পরও সম্পদের তথ্য গোপন রেখে করিম নিজের নামে ও তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যের নামে ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে সাচনাবাজারের কালিবাড়ি গ্রামে দেড়শ শতক মূল্যবান জায়গা বন্দোবস্ত নিয়েছেন।
ভূমি অফিসের তথ্য থেকে জানাযায়, ২০১২ সালে সাচনা মৌজার ১নং সরকারি খতিয়ানভুক্ত কালিবাড়ি গ্রামে ৪২৯০ নং দাগে নিজেকে ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে নিজ নামে ৫০ শতক, একই সময়ে তার স্ত্রী মোছা. সিদ্দিকা আক্তারকেও ভূমিহীন পরিচয় দিয়ে তার স্ত্রীর নামে ৪২৮৩ নং দাগে ৫০ শতক ও ১৪৮৮/২৯৯৮ দাগে তার ছোট ভাইয়ের নামে ৫০ শতক ভূমি বন্দোবস্ত নেন আব্দুল করিম। সম্প্রতি তার প্রতিবেশী মো. মারুফ তার দখলীয় জায়গায় পুরনো ঘরের পাশে নতুন ঘর নির্মাণ করতে গেলে বাঁধা প্রদান করেন আব্দুল করিম। এ সময় করিম তার নামে এই জায়গা বন্দোবস্ত নেয়া আছে বলে কাজ না করার হুঁশিয়ারি দেন মারুফকে। পরে করিমের বিরুদ্ধে মারুফ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করলে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার নামে থাকা সরকারি মূল্যবান এতো জায়গার চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাণিজ্যিক কেন্দ্রের সন্নিকটে আবাসিক এলাকার মধ্যে সরকারি এতো দামি জায়গা এক পরিবারের দখলে বিষয়টি জানাজানি হলে ইতোমধ্যে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মো. মারুফ বলেন, আমার দাদার আমল থেকেই এই বাড়িতে আমরা বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি আমাদের নতুন আরেকটি ঘর নির্মাণের প্রয়োজন পড়লে ঘর তুলতে প্রয়োজনীয় মাটি ফেলে ঘরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করে করিম আমাদের কাজে বাঁধা প্রদান করেন। এবং সাথে সাথেই করিম সুনামগঞ্জ জেলা বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে আমার কাজের বিরুদ্ধে কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেন। বর্তমানে কাজ আমি বন্ধ রেখেছি।
অভিযোগের ব্যাপারে আব্দুল করিম বলেন, আমি এই জায়গা বন্দোবস্ত এনেছি। আমার বন্দোবস্তকৃত জায়গার মধ্যে সে ঘর তোলার কারণে তাকে বাঁধা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যদি করিম ভূমিহীন নীতিমালার আওতায় না আসেন, তাহলে তার বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ